ইউপি চেয়ারম্যান ফজলু গাজী ওই সড়কের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করছেন। তবে এলজিইডি বলছে, ইউপি চেয়ারম্যানকে সড়কের সংস্কার কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এজন্য তাকে কোনো গাছ কাটতে বলা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, এলজিইডির জলবায়ু সহিষ্ণু গ্রামীণ অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৬ ফুট প্রস্থ মাটির রাস্তার সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করছেন মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। সংস্কার কাজ করতে গিয়ে সড়কের উভয়পাশের অন্তত ২৫ বছরের পুরনো ৩০টি তাল গাছসহ বন বিভাগের রোপণ করা বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধশতাধিক গাছ কেটে ফেলেন ইউপি চেয়ারম্যান। এতে মাটির সড়কের সংস্কার কাজ হলেও পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে।
জানতে চাইলে মহিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলু গাজী বলেন, ‘সড়কটির সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় একজনের বাড়ির সামনের ৫-৭টি তাল গাছ কাটতে হয়েছে। যা তার সঙ্গে কথা বলে কাটা হয়েছে।’
চেয়ারম্যান দাবি করেন, ‘এসব গাছ ব্যক্তি পর্যায়ে লাগানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন বিভাগের কাছে অনুমতি চেয়ে একটি আবেদনও জমা দেওয়া হয়ে।
বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শনিবার রাতে মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম সড়ক সংস্কার কাজের জন্য বন বিভাগের লাগানো গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। তার আবেদনটি পটুয়াখালীতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলে গাছ নিলাম দিয়ে বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পর কাটার বিধান আছে। এর ব্যত্যয় হলে বন আইনে মামলা দায়ের করা হবে।’
জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ণ বলেন, ‘সড়ক সংস্কার কাজ করতে আমরা চেয়ারম্যানকে গাছ কাটতে বলিনি। তিনি যদি কোনো গাছ কেটে থাকেন এ দায় তার।’
নজিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার (৬০) বলেন, ‘নজিবপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের বাড়ি থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশের জমি থেকে মাটি কাটা মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সড়ক সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এজন্য সড়কের দুপাশের পুরনো তাল গাছ মাটি কাটা মেশিন দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে।’
একই গ্রামের সোহাগ হাওলাদার (৩৫) জানান, যেখানে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও বেশি গাছ লাগানো দরকার সেখানে উল্টো গাছ কাটা হচ্ছে। এটা আমাদের দুর্যোগ ঝুঁকি আরও বাড়াবে।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে অবগত নই। তবে সড়কের গাছ কাটার বিষয়ে বন ও পরিবেশ কমিটির অনুমতি নিয়ে বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’