logo
ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২২ মে ২০২৫
  1. সর্বশেষ

টাঙ্গাইলের বন কার্পাস

প্রতিবেদক
সংবাদ সবসময়
১৫ মার্চ ২০২৩, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

Link Copied!

মৃত্যুঞ্জয় রায়, কৃষিবিদ ও প্রকৃতিবিষয়ক লেখক:

টাঙ্গাইলের সখীপুরের যাদবপুর শালবনে বন কার্পাস
নাম শালবন হলেও আরও অনেক গাছ আছে। সেগুলোর কিছু গাছে ফুটে আছে ফুল। শালবনের স্থানীয় এনাম বললেন, কয়েক দিন আগে শালবনের মধ্যে আলো করা বেশ বড়সড় একটা ফুল দেখেছিলাম, অনেকগুলো কুঁড়িও ছিল। লতানো গাছ মনে হলো। আশপাশের বনেই হবে, খেয়াল করলে আজও হয়তো চোখে পড়তে পারে।

কথাটা শুনে ফুলটা দেখার আগ্রহ জাগল মনে। বড় ফুল, লতানে গাছ—মনে মনে ঠাহর করার চেষ্টা করলাম। ছদরুলকে জিজ্ঞেস করলাম, ফুলের রং কেমন ছিল? বললেন, হলুদ, কিন্তু মাঝখানটা খয়েরি। বৈশিষ্ট্যগুলো মিলিয়ে নাম মনে করার চেষ্টা করতে থাকলাম। বাইক এগিয়ে চলল টাঙ্গাইলের সখীপুরের নলুয়াবাজার থেকে বাসাইল উপজেলার দিকে। চোখ খোলা রাখলাম শালবনের দিকে, যদি তার দেখা পাই!

হঠাৎ একটা হলুদ ফুল দেখে ছদরুলকে বাইক থামাতে বললাম, জিজ্ঞেস করলাম, দেখুন তো এই ফুল কি না? আনন্দে বলে উঠলেন, হ্যাঁ, এটাই তো সেই ফুল! বাইক থেকে নেমে ঢুকে পড়লাম শালবনের মধ্যে। একটি–দুটি নয়, আরও অনেক ফুল দেখলাম ফুটে আছে। কিন্তু গাছটা লতানো নয়। গাছটাকে কয়েকটা লতা এমনভাবে পেঁচিয়ে-জড়িয়ে ধরেছে যে আসল গাছটা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। লতাগুলো ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম, একটা ফুল ফোটা ডাল থেকে লতাগুলো সরাতেই গাছের আসল চেহারা বেরিয়ে এল। অল্প ডালপালা, গাছটার উচ্চতা সাত ফুটের মতো, পাতা হৃৎপিণ্ডাকার, আগার দিকের কিনারা তিনটি অগভীর খাঁজে বিভক্ত। তবে ডালের আগায় যেখানে ফুল রয়েছে, সেখানকার কচি পাতায় খাঁজ নেই। পাতার ওপর পিঠ মসৃণ হলেও নিচের পিঠ হালকা রোমশ।

একটা ডগার মাথায় ফুটে আছে উজ্জ্বল শর্ষে হলুদ রঙের বেশ বড় একটা ফুল। পাঁচটা পাপড়ি ঘণ্টা বা মাইকের চোঙের মতো মেলে আছে, ফুলের মাঝখানে পাপড়িগুলোর গোড়ার রং গাঢ় খয়েরি, কোনো ঘ্রাণ নেই। তবু তার উজ্জ্বল রঙে আকৃষ্ট হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মধুপায়ী কিছু পতঙ্গ।

ফুলটার আশপাশে অনেকগুলো কুঁড়ি, হালকা লাল আভার সবুজাভ কুঁড়িগুলোর আকৃতি কিছুটা গম্বুজের মতো, মাথা চোখা। একটার পর একটা ফুল ফোটে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসজুড়ে। পৌষেও হয়তো কিছু ফুলের দেখা পাওয়া যায়, তবে নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায় ফল। ফলের ভেতরে থাকে বাদামি রঙের বীজের দানা, যা মাটিতে বুনলেই চারা হয়। বনের মধ্যে ফল ফেটে ঝরে পড়ে, তাই সেখানে প্রাকৃতিকভাবে এই গাছ জন্মে। এ কারণেই একসঙ্গে এতগুলো গাছের দেখা পেলাম।

অনেক ছবি তুললাম। এবার ছদরুলের প্রশ্ন, ফুলটার নাম কী? সত্যিই তো, অনেকক্ষণ ধরে এই বুনো গাছটাকে দেখছি, ছবি তুলছি, অথচ নামটা জানা হয়নি। গাছটার নাম বন কার্পাস বা বন কাপাস। বাংলা ও অসমীয়া ভাষায় এর একই নাম, সংস্কৃত নাম বন কার্পাস, অন্য বাংলা নাম কাখি। উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Thespesia lampas, গোত্র মালভেসি। ইংরেজি নাম ক্যালোস হিবিস্কাস বা কমন ম্যালো।

গুল্ম প্রকৃতির এই গাছ সাধারণত দেখা যায় ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের শালবনে। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের পাহাড়েও আছে। বয়স্ক গাছের কাণ্ডের বাকল থেকে পাটের মতো আঁশ পাওয়া যায়, যা দড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। বন কার্পাসের বীজ ও শিকড় গ্রামাঞ্চলে গনোরিয়া ও সিফিলিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারের কথা শোনা যায়। গাছটির বিপন্নতা যাচাই করা হয়নি, তবে দুর্লভ নয়।

আরও পড়ুন

ঢাকায় ধরা সোনাপাচার-হুন্ডির ‘বস’ চট্টগ্রামের আবু, একদশকে হাজার কোটির মালিক

এবি পার্টিতে যোগদান করলেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের দেড়’শ ছাত্রনেতা

সাতকানিয়া কেঁওচিয়ায় ওয়ার্ড বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

সিলেট ও সুনামগঞ্জের সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোঘণা

সাতকানিয়ায় এওচিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা

বাজালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নব কমিটির সভাপতি রিফন সাধারণ সম্পাদক অমি

আবারও রেড ক্রিসেন্ট ট্রেজারার নির্বাচিত হলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আবদুস সালাম

স্বাধীনতা পদক পেলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আবদুস সালাম

কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগ টহলদল জ্বালানি কাঠসহ পিকআপ আটক

সাতকানিয়ায় পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা

কুমিল্লায় ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনায় তদন্ত কমিটি, স্বাভাবিক হয়নি ট্রেন চলাচল