স্পোর্টস ডেস্কঃ অপেক্ষার অবসান ঘটল অস্ট্রেলিয়াতে। এর আগে যেখানে কখনোই টি-টোয়েন্টি খেলেনি বাংলাদেশ সেখানেই এলো মূলপর্বে বাংলাদেশের দীর্ঘ প্রত্যাশিত জয়। ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ প্রথম এবং এতদিন পর্যন্ত একমাত্র জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আরও পাঁচটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করলেও একটি জয় অধরাই ছিল বাংলাদেশ। এবার শেষ হলো সেই অপেক্ষার পালা। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২০২২ বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নেদারল্যান্ডসের সামনে ১৪৫ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদ এবং হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নেদারল্যান্ডস ২০ ওভারে ১৩৫ রানে অল আউট হয়। এতেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় ৯ রানের জয়। তাসকিন আহমেদ ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৪ উইকেট।
হোবার্টে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ১৪৪ রানে। তবে সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তাসকিন আহমেদের দুর্দান্ত শুরুতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় প্রথম ওভারেই। অফ স্ট্যাম্পের পড়ে বেরিয়ে যাওয়া তাসকিনের প্রথম ডেলিভারিটা নরম হাতে খেলতে চেয়েছিলেন নেদারল্যান্ডস ওপেনার বিক্রমাজিত সিং। কিন্তু সুইংয়ে পরাস্ত হয়েছেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে ইয়াসির আলির হাতে। ডানহাতি ব্যাটার ব্যাস ডি লিডের জন্য দ্বিতীয় ডেলিভারিটাও অফ সাইডে সুইং করালেন তাসকিন। ফাঁদে পা দিলেন ডি লিডও। ব্যাট চালিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। সুইংয়ে পরাস্ত হয়েছেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে।
দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ডাচদের বিপদ বাড়ে দুটি রান আউটে। চতুর্থ ওভারে আফিফ হোসেন ধ্রুবর দারুণ এক থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরেন ম্যাক্স ওদুদ। এক বল পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের থ্রুতে রান আউট হয়েছেন টম কুপারও। দলীয় ১৫ রানের মাথায় চার উইকেট হারিয়ে ফেলে নেদারল্যান্ডস।
এরপর স্কট এডওয়ার্ডসকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন অ্যাকারম্যান। ৪৭ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়ে ডাচদের ম্যাচে ফেরানোর ইঙ্গিতও দেন। কিন্তু বিপদ বুঝতে পেরে বেশি সময় আর তাদের জুটি ধরে রাখতে দেননি সাকিব আল হাসান।
১২তম ওভারে বল হাতে আসেন সাকিব। তার করা তৃতীয় বলটি রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে হাসান মাহমুদের তালুবন্দি হন স্কট এডওয়ার্ডস। দলীয় ৫৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ডাচরা। এডওয়ার্ডস ২৪ বলে ১৬ রান করে ফেরেন। পরের ওভারে দারুণ এক সুইংয়ে টিম প্রিঙ্গেলকে পরাস্ত করে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। এতেই ৬৬ রানে ৬ উইকেট হারায় ডাচরা। ভাঙে ডাচ প্রতিরোধ।
১৬তম ওভারে বল হাতে নিজের শেষ ওভার করতে আসেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম তিন ওভারে ১২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেওয়া তাসকিন শেষ ওভারে এসে তুলে নেন আরও দুটি উইকেট। এবারে শাহরিজ আহমদ এবং ফিফটি হাঁকানো অ্যাকারম্যানকে। আউট হওয়ার আগে অ্যাকারম্যান ৪৮ বলে ৬টি চার আর দুটি ছক্কায় ৬২ রান করেন। তিনি ফেরার পর জয় এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।
শেষ দিকে যদিও পল ভ্যান মিকেরেন ১৪ বলে ২৪ রানের ক্যামিও খেলেন। কিন্তু তাতে কেবল ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ে আর কমে ডাচদের পরাজয়ের ব্যবধান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৩৫ রানে অল আউট হয় নেদারল্যান্ডস। আর বাংলাদেশ পেয়ে যায় ৯ রানের দুর্দান্ত এক জয়। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। দুটি উইকেট নেন হাসান মাহমুদ আর একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান এবং তাসকিন আহমেদ।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্তর ২৫, আফিফ হোসেনের ৩৮ আর শেষ দিকে মোসাদ্দেকের ১২ বলে ২০ রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে তুলতে পারে ১৪৪ রান।