ইকবাল মুন্না: প্রতিটি মা-বাবা তার সন্তানকে নির্দিষ্ট আশা নিয়ে বড় করে তুলে। পরিবার যত দারিদ্র হউক মা-বাবা কখনো সন্তানদের সেটা বুঝতে দেন না। একটি নির্বাচন যে আমার সন্তানের তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিবে সেটা আমি ভাবিনি। যদি আমার ছেলে সবকিছু বুঝতো জানতো তাহলে সেটা ভিন্ন কথা কিন্তু আমার ছেলে অবুঝ।
নিহত ছেলের বিষয়ে বলছেন তার বাবা জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি রিক্সা চালিয়ে সংসার চালালেও, ছেলেকে কখনো তার অভাব বুঝতে দিয় নাই। দু’টি প্রাইভেট দিয়েছি ছেলের যাতে পড়াশুনার ক্ষতি না হয়। একজন রিক্সা চালকের পক্ষে যেটি অসম্ভব সেটা আমি সম্ভব করেছি। আমি ছেয়েছি ছেলে আমার স্বপ্ন পূরণ করবে, ছেলে দেশের জন্য লড়বে।
গত বছর ৭ম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নলুয়া ইউনিয়নের বোর্ড অফিস ভোট কেন্দ্রে রাস্তার পাশে গলিতে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তারা, খুন করে কি পেয়েছে জানি না তবে আমার স্বপ্নকে তারা হত্যা করেছে। আমার ছোট একটা মাত্র ছেলে যার হত্যার ন্যায্য বিচার আদৌ পাবো কিনা জানি না। আমার সন্তান হত্যাকারীকে আল্লাহ্ ধ্বংস করবে।
আমাদের পারিবারিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আমার ছেলে তাসিব’কে খেলা শুরু খেলা শুরু বলে স্লোগান দিয়ে খুন করে। খুনী প্রভাবশালী হওয়ায় এখনো গ্রেপ্তার হয়নি মূলহোতা কেউ। আমার এক মামা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন তাই মামার পথে নিজের ছেলেকে হাঁটতে বেড়ে তুলেছিলাম। একজন আর্মি সদস্য বানাতে চেয়েছি। আমি শুনেছি আমার ছেলে তাসিব হত্যার সাথে জড়িত দু-একজন গ্রেপ্তার হয়েছে কিন্তু খুনের সাথে সম্পৃক্তরা কখন যে গ্রেপ্তার হবে এবং কখন যে তাদের সঠিক বিচার হবে সে আশায় আছি। পারিবারিক ভাবে খুব অসহায় অবস্থায় আছি। আমার ছেলে তাসিফের খুনের পরে অনেকে আমাকে নানা সহায়তার কথা বললেও কেএসআরএম থেকে সামান্য কিছু সহায়তা ছাড়া কিছুই জুটে নাই।
তাসিব খুনের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ বলেন, তাসিব হত্যা সাথে জড়িত ৩’জন আসামী গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা ১৬৪ জবানবন্দী দিয়েছে। তাদের তথ্য মতে খুনের সাথে জড়িতে অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ই ফেব্রুয়ারী সাতকানিয়ায় ইউপি নির্বাচন চলাকালে ছুরিকাঘাতে তাসিব নামে শিক্ষার্থী নিহত হয়। উপজেলার নলুয়া ইউনিয়ন বোর্ড অফিস কেন্দ্রে এর ঘটনা ঘটে । নিহত তাসিব মরফলা আর এম এন উচ্চ বিদ্যালয় উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্র।