বেলালুর রহিম: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এম.পি বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স ঘোষনার পরপরই যখন ঘরের মা-বোন ও জনপ্রতিনিধি মাদকের বিরুদ্ধে এক হয়েছেন তখন মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের ঠাঁই কোনদিন বাংলাদেশে হবে না। ২০১৩ সালে জঙ্গীবাদের উত্থান আমরা দেখেছিলাম। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ও তার জোট ঘোষণা দিয়ে ৯২দিন সন্ত্রাস করে বাসে আগুন দিলে বাবা-ছেলে মারা যান। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য বার্ণ ইউনিট হাসপাতাল খুললেন। এটিই হলো প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মানবতা। পরে আলেম-ওলামা থেকে শুরু করে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে সন্ত্রাসীদের হটিয়ে দেয়া হয়। তিনি আজ (মঙ্গলবার) বিকালে সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা বাবুনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাদক, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত মাদক, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস বিরোধী সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ইসলাম ধর্মে মানুষ হত্যাকারীর কোন স্থান নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এ দেশে যখন সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটে, তখন সারা বিশ্বের মানুষ নড়েচড়ে বসেছিল। তখন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ ফতুয়া দিয়েছিলেন, গাছের ঢাল ভাঙ্গলেও প্রয়োজন ব্যতিত তা করা যাবে না। আমাদের দেশে মাদক তৈরী হয় না। মাদক আসে বিদেশ থেকে। মাদকের জন্য আইন পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করা হয়েছে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছেই, মাদককে কোনক্রমে এদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। নতুন প্রজন্মকে মাদক থেকে উদ্ধার করতে হবে, এটিই আমাদের ওয়াদা। এজন্য জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের লোকদের সহায়তা কামনা করছি।
তিনি আরো বলেন, জেলখানায় যেসব অপরাধী থাকেন, তার মধ্যে শতকরা ৬০ভাগ হচ্ছে মাদক মামলার আসামী। আগামীতে সরকারি চাকরি পেতে ডোপটেস্ট আবশ্যিক করা হয়েছে। পুলিশের সেই ব্যবস্থা চলছে। অন্যদিকে চরমপন্থী ও জলদস্যু যারা আত্মসমর্পন করেছেন তাদের মামলাগুলো তুলে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। মনে রাখতে হবে, যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীবিত ও ক্ষমতায় থাকবেন ততদিন বাংলাদেশ আলোকিত হবে ও এগিয়ে যাবে। দেশের মানুষ তা মনে করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন এদেশ স্বাধীন করেছেন তখন তিনি অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার ঘোষনা দিয়েছিলেন। তারই আলোকে তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে তার নিজ নিজ ধর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করেছেন। শেখ হাসিনা শুধু প্রধানমন্ত্রীই নয়, তিনি হৃদয় দিয়ে ইসলামকে ধারণ করেন। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন কোরআন সুন্নাহ’র বিরুদ্ধে তিনি কিছু করবেন না। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিলে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন, মনে রাখবেন প্রধানমন্ত্রী তাহাজ্জুদের নামায পড়েন, তার হাতেই বাংলাদেশ।
চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর সভাপতিত্বে ও সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়েরের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট জহির উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মোতালেব, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক গোলাম ফারুক ডলার, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী, ফয়েজ আহমদ লিটন, আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার, নাছির উদ্দীন টিপুসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের আগে স্ব-রাষ্ট্রমন্ত্রী লোহাগাড়ার চুনতিতে নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের উদ্বোধন করেন।